বৃত্ত
বৃত্ত কাকে বলে |
বৃত্ত শুনলেই মনের মধ্যে একটি গোলাকার চিত্র কল্পনা হয়, তাই না? আমরা ছোটবেলা থেকে বৃত্ত চিনে এসেছি কিন্তু বৃত্তের আসল সংজ্ঞা কি জানি? আজকের পোস্টে আমরা বৃত্তের সংজ্ঞা, বৃত্ত কাকে বলে, বৃত্তের সকল বৈশিষ্ট্য ও নামগুলো জানব -
- বৃত্তের কেন্দ্র
- বৃত্তের ব্যাসার্ধ
- বৃত্তের ব্যাস
- বৃত্তচাপ
- বৃত্তাংশ
- বৃত্তের পরিধি
- বৃত্তের ক্ষেত্রফল
- বৃত্তের জ্যা
- বৃত্তের ছেদক রেখা
- বৃত্তের স্পর্শক
- বৃত্তীয় কোণ
- অর্ধবৃত্তস্থ কোণ
- বৃত্ত কলা
- কেন্দ্রস্থ কোণ
- বৃত্তের অন্তর্লিখিত কোণ বা বৃত্তস্থ কোণ
বৃত্ত কাকে বলে?
কোন নির্দিষ্ট বিন্দুকে কেন্দ্র করে যদি অপর একটি বিন্দু সর্বদা সমান দূরত্ব বজায় রেখে পরিভ্রমণ করে তবে ওই চলন্ত বিন্দুর দ্বারা আবদ্ধ চিত্রকে বৃত্ত বলে। বিশদভাবে বৃত্ত কাকে বলে তা বুঝাতে গেলে বলা যায়, একটি নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে সর্বদা সমান দূরত্ব বজায় রেখে অন্য একটি বিন্দু ওই বিন্দুটির চারদিকে একবার ঘুরে এলে যে আবদ্ধ বক্রাকার ক্ষেত্র তৈরি হয় তাকে বৃত্ত বলে।
বৃত্ত কাকে বলে সহজভাবে বললে, একটি নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে সম দূরবর্তী একই সমতলে অবস্থিত সকল বিন্দু দ্বারা গঠিত সুষম আবদ্ধ বক্রাকার চিত্রকে বৃত্ত বলে।
বৃত্তের বৈশিষ্ট্য ও মৌলিক ধর্ম
১) একটি বৃত্ত একটি সরলরেখাকে সর্বোচ্চ দুইটি বিন্দুতে ছেদ করে।
২) একই সরলরেখায় অবস্থিত নয় এমন তিনটি বিন্দু দিয়ে কেবলমাত্র ১টি বৃত্ত আঁকা যায়।
৩) একই সরলরেখায় অবস্থিত এমন যেকোনো তিনটি বিন্দুর মধ্যে দিয়ে গমনকারী কোন বৃত্ত আঁকা সম্ভব নয়।
৪) দুটি নির্দিষ্ট বিন্দু দিয়ে অসংখ্য বৃত্ত আঁকা যায়।
সম্পর্কিত নিবন্ধ - পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান
সমদূরবর্তী কাকে বলে?
যে সব বিন্দু একটি নির্দিষ্ট বিন্দু হতে নির্দিষ্ট দুরত্বে বা সমান দুরত্বে অবস্থিত তাকে সমদূরবর্তী বলে। মানে, নির্দিষ্ট একটি বিন্দু হতে সেসব বিন্দুর দুরত্ব একটি ধ্রূবক রাশি। আর সেই নির্দিষ্ট বিন্দুটিকে বলা হয় বৃত্তের কেন্দ্র। নির্দিষ্ট দুরত্বটিকে বলা হয় বৃত্তের ব্যাসার্ধ।
বৃত্ত 2D অর্থাৎ দ্বিমাত্রিক জ্যামিতির সুষম আবদ্ধ বক্রাকার চিত্র।
বৃত্তের ব্যাসার্ধ কাকে বলে? বিস্তারিত
বৃত্তের কেন্দ্র হতে পরিধি পর্যন্ত দূরত্বকে ব্যাসার্ধ বলে। আর বৃত্তের ব্যাসার্ধর দ্বিগুণকে বৃত্তের ব্যাস বলে।
বৃত্তের ব্যাসার্ধের বৈশিষ্ট্য ও মৌলিক ধর্ম
- একটি বৃত্তের ব্যাসার্ধ কত জানা থাকলে বৃত্তটি আঁকা যায়।
- একটি বৃত্তের ব্যাসের অর্ধেক ব্যাসার্ধ। অর্থাৎ, সূত্র- ব্যাস ÷ 2 = ব্যাসার্ধ।
- একটি বৃত্তের অসংখ্য ব্যাসার্ধ থাকে।
- বৃত্তের সকল ব্যাসার্ধ সমান।
বৃত্তের ব্যাস কাকে বলে? বিস্তারিত
বৃত্তের কেন্দ্রগামী ও বৃহত্তম জ্যাকে ব্যাস বলে। অথবা পরিধির এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত কেন্দ্রগামী রেখাকে ব্যাস বলে। ব্যাস কে d দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
বৃত্তের ব্যাস এর বৈশিষ্ট্য ও মৌলিক ধর্ম
- একটি বৃত্তের ব্যাস জানা থাকলে বৃত্তটি আঁকা যায়।
- একটি বৃত্তের ব্যাসার্ধের দ্বিগুণ হচ্ছে ব্যাস। অর্থাৎ সূত্র- ব্যাসার্ধ × 2 = ব্যাস।
- একটি বৃত্তের অসংখ্য ব্যাস থাকে।
- বৃত্তের সকল ব্যাস সমান।
বৃত্তের কেন্দ্র কাকে বলে? বিস্তারিত
কোন নির্দিষ্ট বিন্দু কে কেন্দ্র করে যদি অপর একটি বিন্দু সর্বদা সমান দূরত্ব বজায় রেখে পরিভ্রমণ করে তবে ওই নির্দিষ্ট বিন্দুকে কেন্দ্র বলে।
বৃত্তের কেন্দ্রের বৈশিষ্ট্য ও মৌলিক ধর্ম:
- বৃত্তের কেন্দ্র কোন রেখা নয়
- বৃত্তের কেন্দ্র এর কোন দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা নেই। এটি একটি বিন্দু।
- বৃত্তের কেন্দ্র বৃত্তের ব্যাস এর মধ্যবিন্দু
- একটি বৃত্তের কেন্দ্র দিয়ে অসংখ্য বৃত্ত আঁকা সম্ভব
- বৃত্তের কেন্দ্র বৃত্তের ব্যাসকে দুই ভাগে বিভক্ত করে। সেগুলো ব্যাসার্ধ।
বৃত্তের জ্যা কাকে বলে
বৃত্তের পরিধির এক প্রান্ত হতে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত দূরত্বকে জ্যা বলে।
বৃত্তের জ্যা এর বৈশিষ্ট্য ও মৌলিক ধর্ম
- বৃত্তের সমান সমান জ্যা কেন্দ্র থেকে সমদূরবর্তী।
- বৃত্তের জ্যা এর আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো বৃত্তের দুটি জ্যা এর মধ্যে কেন্দ্রের নিকটতর জ্যাটি অপর জ্যা এর তুলনায় বৃহত্তর।
- একটি বৃত্তে অসংখ্য জ্যা আঁকা যায়।
- যেকোনো জ্যায়ের লম্বসমদ্বিখণ্ডক কেন্দ্রগামী হয়
- বৃত্তের কেন্দ্র থেকে সমদূরবর্তী সকল জ্যা পরস্পর সমান।
- বৃত্তের সমান সমান জ্যা কেন্দ্র থেকে সমদূরবর্তী।
বৃত্তের সূত্র সমূহ:
একটি বৃত্তের ব্যাসার্ধ কে r একক ধরা হয়। তাই বৃত্তের পরিধি = 2πr একক।
বৃত্তের ক্ষেত্রফল πr^2
আরও পড়ুন - বাংলাদেশ সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান
বৃত্তের বৃত্তচাপ কাকে বলে?
উত্তরঃ বৃত্তের পরিধির যেকোন অংশকে ঐ বৃত্তের বৃত্তচাপ বলে।
বৃত্তের উপচাপ কাকে বলে?
উত্তরঃ অর্ধবৃত্ত অপেক্ষা ছোট চাপকে উপচাপ বলে। উপচাপে অন্তর্লিখিত কোন স্থূলকোণ।
বৃত্তের অধিচাপ কাকে বলে?
উত্তরঃ অর্ধবৃত্ত অপেক্ষা বড় চাপ কে অভিচাপ বলে। অধি চাপে অন্তর্লিখিত কোন সূক্ষ্মকোণ।
বৃত্তের স্পর্শক কাকে বলে?
উত্তরঃ সমতলস্থ একটি বৃত্ত ও একটি সরলরেখার যদি একটি ও কেবল একটি সাধারণ বিন্দু থাকে তবে রেখাটিকে বৃত্তটির স্পর্শক বলে।
বৃত্ত কলা কাকে বলে?
উত্তরঃ কোন বৃত্তের দুইটি ব্যাসার্ধের অন্তর্ভুক্ত অংশকে বৃত্ত কলা বলে।
বৃত্তের ছেদক কাকে বলে?
উত্তরঃ সমতলস্থ একটি বৃত্ত ও একটি সরলরেখার যদি দুইটি ছেদবিন্দু থাকে তবে রেখাটিকে বৃত্তটির ছেদক বলে।
বৃত্তের বৃত্তস্থ কোণ কাকে বলে?
উত্তরঃ একটি কোণের শীর্ষবিন্দু কোন বৃত্তের একটি বিন্দু হলে এবং কোনটির প্রত্যেক বাহুতে শীর্ষবিন্দু ছাড়াও বৃত্তের একটি বিন্দু থাকলে কোনটিকে বৃত্তস্থ কোণ বা বৃত্তে অন্তর্লিখিত কোণ বলে।
বৃত্তের কেন্দ্রস্থ কোণ কাকে বলে?
উত্তরঃ একটি কোণের শীর্ষবিন্দু যদি বৃত্তের কেন্দ্র অবস্থিত হয় তবে কোনটিকে ঐ বৃত্তের কেন্দ্রস্থ কোণ বলে।
একটি বৃত্তের কয়টি অংশ?
উত্তরঃ একটি বৃত্তের কয়টি অংশ তা এক কথায় জবাব দেওয়া একটু কঠিন। সহজ করে বললে, বৃত্তের বিভিন্ন অংশ নিয়ে বৃত্ত গঠিত। একটি সাধারণ বৃত্ত থেকে বৃত্তের বিভিন্ন অংশ চেনা যায় না। বৃত্তের বিভিন্ন অংশ চিহ্নিত করতে চাইলে বৃত্তে তা অংকন করতে হয়। বৃত্তের বিভিন্ন অংশ সমূহ যেমন: বৃত্তের কেন্দ্র, বৃত্তের ব্যাসার্ধ, বৃত্তের ব্যাস, বৃত্তচাপ, অর্ধবৃত্ত চাপ, অর্ধবৃত্ত, বৃত্তাংশ, বৃত্তের পরিধি, বৃত্তের ক্ষেত্রফল, বৃত্তের জ্যা, বৃত্তের ছেদক রেখা, বৃত্তীয় কোণ, অর্ধবৃত্তস্থ কোণ, বৃত্ত কলা ইত্যাদি।