ওজন কমানোর ১০ টি উপায় পোস্টে স্বাগতম। এই পোস্ট থেকে দ্রুত ওজন কমানোর উপায় জানতে পারবেন। ojon komanor upay. অতিরিক্ত ওজন কারোই পছন্দ না। আপনি কি অরিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য প্রচুর টাকা পয়সা খরচ করেও ওজন কমাতে পারছেন না। তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্যই!
ওজন কমানোর ১০ টি উপায় |
‘স্বাস্থ্যই সম্পদ’ কথাটি বুলিমাত্র সত্য। সুন্দর স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য ওজনের গুরুত্ব অপরিসীম। ‘হঠাৎ মোটা হয়ে গেছি, কিভাবে খুব দ্রুত ওজন কমানো যায়?’ আপনার প্রশ্ন যদি এমন হয় তাহলে আগে নিজের প্রশ্নই ঠিক করুন। ‘হঠাৎ’ করে কেউ মোটা হয়ে যেতে পারে না। আপনি প্রতিদিন যদি কিং সাইজের বার্গার খেয়ে সারাদিন ঘুমান, তবুও ৫-৬ মাস লাগতে পারে ওজন ১০-১৫ কেজি বাড়তে। তাই এই হঠাৎ মোটা হয়ে যাওয়ার চিন্তা বাদ দিন। আপনার ওজন বেড়েছে অনেকদিন ধরেই কিন্তু আপনি সেটা খেয়ালই করেননি কিংবা স্বাস্থ্যের ব্যাপারে উদাসীন ছিলেন।
ওজন যেভাবে ধীরে ধীরে বাড়ে, ওজন কমানোটাও আসলে ধীরে ধীরেই হয়। যদি আপনি খুব দ্রুত অর্থাৎ এক সপ্তাহে ওজন কমানোর উপায়, এক মাসে ১০ কেজি ওজন কমানোর উপায়, তিনদিনে ওজন কমানোর উপায়- এসব উপায় খুঁজে থাকেন তাহলে বলছি, এগুলো আসলে সবসময় স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হয় না।
ওজন কমানোর উপায়
আপনি যদি দ্রুত ওজন কমাতে চান তবে কিছু নির্দিষ্ট উপায়ে ধীরে ধীরে কমান। চলুন জেনে নেই দ্রুত ওজন কমানোর ১০ টি উপায় কি কিঃ
১. সফট ড্রিংকস পানীয় এড়িয়ে চলুন
চিনিযুক্ত পানীয় বা সফট ড্রিংকস হতে পারে আপনার ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণ। অনেকেরই দৈনন্দিন জীবনের সাথে এক বোতল কোক ওতপ্রতভাবে জড়িয়ে আছে। কিন্তু আপনি কি জানেন নিয়মিত কোক খেয়ে আপনি নিজের কি পরিমাণ ক্ষতি করছেন? ৫০০ মিলির এক বোতল অরিজিনাল কোকা কোলায় ৫৩ গ্রাম চিনি থাকে যা প্রায় ১২ চামচ চিনির সমান! বিজ্ঞানীরা চিনিকে সাদা বিষ বলে আখ্যায়িত করেন অনেকক্ষেত্রে। চিনি শরীরের ওজন বাড়ানোর জন্য অনেকাংশে দায়ী। তাই সফট ড্রিংকস কমিয়ে খেলে ওজন কমানো অত্যন্ত সহজ হয়ে যাবে।
২. কিটো ডায়েট
কিটোজেনিক বা Keto diet হল শর্করার পরিমাণ কম ও চর্বির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি রেখে ডায়েট। এটাকে মিলিটারি ডায়েটও বলে।
এখানে শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট থাকে ৫ থেকে ১০ ভাগ মাত্র আর চর্বি থাকে ৭৫ শতাংশ। যা সাধারণ 'ডায়েট' এর তুলনায় একেবারেই ভিন্ন। কিন্তু প্রোটিন বা আমিষের পরিমাণ সাধারণ ডায়েটের মতোই ২০ থেকে ২৫ শতাংশ থাকে। মাছ, সামদ্রিক মাছ, মুরগির মাংস, চর্বিহীন গরুর মাংস, মাখন, ডিম, ঘি, পনির থাকে কিটো ডায়েট এ।
৩. অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলুন
আমরা সকলেই জানি যে ফাস্টফুড ও চর্বিযুক্ত খাবার ওজন বাড়ায়। তাই ওজন যদি কমাতে চান অবশ্যই এসব অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া কমিয়ে দিন। চিনিকেও না বলুন। চিনির হাই কার্বোহাইড্রেট ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণ। মাসে এক দুবার মিষ্টি জাতীয় খাদ্য খাবেন, তাও সামান্য পরিমাণে। বার্গার, স্যান্ডউইচ, বিরিয়ানি, পিজ্জা, পোলাও অর্থাৎ সকল তেলযুক্ত খাদ্য খাওয়া কমিয়ে দিন।
তাছাড়া খাওয়ার আধা ঘণ্টা আগে এক গ্লাস পানি পান করে খাবেন। এতে যেমন পরিপাক সহজে হবে তেমনি ওজন কমাতে সহায়তা করবে। ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস পানি খাবেন ওজন কমানোর জন্য। রাতের খাবার শোয়ার আধা ঘণ্টা আগে খাওয়া উত্তম। এতে ফিট থাকতে পারবেন।
৪. দিনে ঘুমের কথা ভুলে যান
'আলস্যে নিদ্রা অতি ভয়ংকরী' কথাটি মনিষীরা কিন্তু এমনি এমনি বলেনি। আপনি যদি শুয়ে বসে দিন কাটান তাহলে ভুড়ি বাড়বেই। রাতে পর্যাপ্ত ঘুম দিন, দিনে ঘুমাবেন না। পরিশ্রম করবেন, ঘাম ঝরাবেন। শারিরীক ব্যায়াম করবেন টুকটাক। জগিং করে দৌড়ানো, হাঁটা, সাইকেল চালানো, নাচ, পুশ আপ ইত্যাদি হতে পারে আপনার ওজন কমানোর ও স্বাস্থ্য ভালো রাখার চাবিকাঠি!
৫. স্বাস্থ্যকর নাস্তা নির্বাচন করুন
সকাল সকাল যা করবেন, সারাদিন কিন্তু অনেকটা সেভাবেই কাটবে। সকালে ভালো কাজ করলে দিনটাও ভালো কাটতে পারে৷ তাই সকালের নাস্তায় ভালো খাবার রাখুন। সুষম খাদ্য থাকতে হবে অবশ্যই। ডিম কিংবা দুধ এক্ষেত্রে পারফেক্ট চয়েজ হতে পারে। তাছাড়া সবজি দিয়ে রুটি খেলে দেহের চাহিদা পূরণ হবে। চা টাও রাখতে পারেন সতেজ থাকার জন্য। গ্রিন টি খাওয়াটা বেস্ট অপশন হবে!
৬. ফল মূল কে হ্যাঁ বলুন
মাছ, ফলমূল ও শাক সবজি খাওয়া বাড়িয়ে দিন। দেখা গেছে, কেউ যদি দুই তিন মাস শুধু শাক সবজি খায়, তাহলে তার শরীরে অতিরিক্ত ওজন কমে একদম স্বাভাবিক হয়ে যায়।
খুব দ্রুত ওজন কমানোর ক্ষেত্রে প্রতিদিন দুবেলা ভিটামিন সমৃদ্ধ শাক সবজি খাবেন। আরও পড়ুন -
৭. লেবু মধু গরম পানির রহস্য
সকাল বেলা নিয়মিত লেবু মধু ও গরম পানি হতে পারে সহজ ওজন কমানোর উপায়! গরম পানি শরীরের টক্সিন নামক ক্ষতিকারক পদার্থ দূর করতে সহায়তা করে। এছাড়া শুধু গরম পানি খেলেও চলবে। কেননা গরম পানি শরীরের অস্বাস্থ্যকর মেদ দূর করতে সাহায্য করে।
পড়ুন - লেবুর উপকারিতা ও অপকারিতা
৮. পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান
আপনি জেনে অবাক হবেন যে পর্যাপ্ত ঘুম আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। মনগড়া কথা না! গবেষণায় প্রমাণিত যে পর্যাপ্ত ঘুম নাহলে মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে ও ওজন বেড়ে যায়। নিয়মিত আট ঘন্টা ঘুম হতে পারে আপনার দ্রুত ওজন কমানোর চাবিকাঠি!
'Early to bed & Early to rise,
Makes a man healthy wealthy and wise'
৯. মসলাদার খাবারকে ‘না’ বলবেন না
ওজন কমানোর জন্য হয়ত আপনি সিদ্ধ সবজি কিংবা মাছ খেয়ে ডায়েট করতে পারেন। কিন্তু মসলা, যেমন - হলুদ, জিরে গুঁড়া, ধনে ইত্যাদি আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে। এগুলোকে বাদ দেবেন না কখনো।
১০. ঘুরে ঘুরে ফোনে কথা বলুন
ওজন বাড়ার প্রধান কারণ হচ্ছে শুয়ে বসে সময় কাটানো। তাই ফোনে কথা বলার সময় কিন্তু আপনি আপনি ওজন কমাতে পারেন! কথা বলার সময় হাঁটতে থাকবেন। এইভাবে প্রতি ১০ মিনিটে ৩৬% ক্যালরি নষ্ট করতে পারবেন যা ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। আপনি চাইলে আপনার স্মার্টফোনে 'Weight lose' অ্যাপ ডাউনলোড করে নিতে পারেন। এই অ্যাপগুলো বেশ কাজে দেয় ওজন কমানোর ক্ষেত্রে।
'সচেতনতাই চাবিকাঠি'। আপনি যদি নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন হোন তাহলে অবশ্যই খুব দ্রুত ওজন কমাতে পারবেন। চলুন আরেকবার চোখ বুলিয়ে নেই কিভাবে ওজন কমানো যায়, খুব দ্রুত ওজন কমানোর ১০ টি টিপ্সঃ
- সফট ড্রিংকস পানীয় এড়িয়ে চলুন
- কিটো ডায়েট
- অস্বাস্থ্যকর খাবার লুকান
- দিনে ঘুমের কথা ভুলে যান
- স্বাস্থ্যকর নাস্তা নির্বাচন
- ফল মূল কে হ্যাঁ বলুন
- লেবু মধু গরম পানির রহস্য
- পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান
- মসলাদার খাবারকে ‘না’ বলবেন না
- ঘুরে ঘুরে ফোনে কথা বলুন
আরও পড়ুন - ১০ টি ক্যালসিয়াম এর অভাব জনিত লক্ষণ
আশা করি, ওজন কমানোর ১০ টি উপায় (ojon komanor upay) টিপসগুলো আপনাকে ওজন কমাতে সাহায্য করবে।