কুরবানী ঈদ বা ঈদুল আজহার নামাজের নিয়ত ও নিয়ম

আসসালামু আলাইকুম, কুরবানী ঈদ বা ঈদুল আজহার নামাজের নিয়ত ও নিয়ম পোস্টে আপনাদের স্বাগতম। Eid ul adha namaz । মুসলমানদের ধর্মীয় দুটি উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। আনেকেই ঈদের নামাজ আদায় করার নিয়ম জানি না। এই পোস্টে কুরবানী ঈদের নামাজের নিয়ম আপনাদের শেখাব।

ঈদুল আযহা বা কুরবানী ঈদ হলো ত্যাগ বা উৎসর্গের ঈদ। ঈদের নামাজ বছরে ২ বার আদায় করার কারনে আমরা অনেকেই ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম ও নিয়ত ভুলে যাই।

কুরবানী ঈদ বা ঈদুল আজহার নামাজের নিয়ত ও নিয়ম
ঈদুল আজহার নামাজের নিয়ত ও নিয়ম
যিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখে উৎযাপনীয় ঈদোৎসবকে ঈদুল আজহা বলা হয়। আজহা শব্দের অর্থ হলো কুরবানী করা। ঈদুল ফিতরের ন্যায় ঈদুল আযহা ঈদেও একই ওয়াক্তে অতিরিক্ত ৬ তাকবীরের সাথে ২ রাকাত ওয়াজিব নামায পড়তে হয়। এ নামাযের শর্ত, নিয়ম-কানুন, বিধি-বিধান অবিকল ঈদুল ফিতর নামাজের অনুরুপ। এবার চলুন জেনে নিই কুরবানী ঈদ বা ঈদুল আজহার নামাজের নিয়ত ও নিয়ম।


ঈদুল আজহার দিনে করনীয় সুন্নত কাজঃ

ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিনে সুন্নত কাজগুলো প্রায় একই রকম। নিচে ঈদুল আজহার সুন্নত কাজগুলো বলা হলো -
  • খুব ভোরে নিদ্রাত্যাগ করা।
  • মিসওয়াক করা।
  • গোসল করা।
  • উত্তম পোশাক পরিধান করা।
  • চোখে সুরমা লাগানো।
  • সুগন্ধী ব্যবহার করা।
  • যথাশীঘ্র নামাযের ময়দানে গমন করা।
  • ঈদুল আজহার নামায আদায় করতে যাওয়ার সময় তাকবীরে তাশরীক বলতে বলতে যাওয়া।
  • ঈদের মাঠে যাওয়ার সময় যে পথে যাবে, সালাত শেষে ফিরার সময় সে রাস্তায় না এসে অন্য কোন রাস্তায় আসা।
  • ঈদের শুভেচ্ছা জানানো।
  • কুরবানী ঈদের নামাযের পূর্বে কিছু খাওয়া-দাওয়া না করা উত্তম।
  • ঈদুল আজহার দিনের নামাজ ঈদুল ফিতরের নামজের তুলনায় কিছু আগে আদায় করা উত্তম। কেননা, ঈদের নামাজ আদায় করার পর কুরবানী করতে হয়।
  • কুরবানীর গোশত যতদুর সম্ভব তাড়াতাড়ি পাক করে খাওয়া উত্তম।

ঈদুল আজহার নিয়ত । কুরবানী ঈদের নামাজের নিয়ত

নিয়ত আরবিতেঃ নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহে তায়ালা রাকাআতাই ছালাতিল ঈদুল আজহা মা’আ ছিত্তাতি তাকবীরাতি ওয়াজিবুল্লাহি তা’য়ালা ইক্তাদাইতুল বি-হাযাল্‌ ইমামে মোতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শরিফাতি আল্লাহু আকবর।

নিয়ত বাংলায়ঃ আমি কেবলামুখী হয়ে আল্লাহর ওয়াস্তে ছয় তাকবীরের সাথে ঈদুল আযহার দু’ রাকআত ওয়াজিব নামায পড়তেছি আল্লাহু আকবার।

আইয়্যামুত তাশরীকঃ

যিলহজ্জ মাসের নবম তারিখ হতে ত্রয়োদশ তারিখের আসর নামাযের বাদ পর্যন্ত প্রতি ওয়াক্ত নামাযের পরে এবং দশম তারিখের ঈদের নামাযের পরে উচ্চ স্বরে তাকবীরে তাশরীক পাঠ করতে হয়। এটা জামায়াতের নামাযে পড়া ওয়াজিব এবং একাকী নামাযে পড়া সুন্নত।

উচ্চারণঃ আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবার ওয়ালিল্লাহিল হামদ।

অর্থঃ আল্লাহ মহান! আল্লাহ মহান! আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, এবং আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান। এবং সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। (তাবারানী মুজামে কাবীর: হাদিস ৯৫৩৮, মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা: হাদিস: ৫৬৭৯)

ঈদুল আজহার নামাজের নিয়ম । কুরবানী ঈদের নামাজের নিয়ম

ঈদ উল আযহা নামাজ আদায় করার নিয়মঃ আমি ঈদুল আজহার দুই রাকাআত ওয়াজিব নামাজ ছয় তাকবিরের সহিত এই ইমামের পেছনে কিবলামুখী হয়ে আল্লাহর ওয়াস্তে আদায় করছি, এ নিয়ত অন্তরে স্থির করা বা মুখে বলা। তারপর তাকবিরে তাহরিমা ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত বাঁধা ও ছানা পড়া।
ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ম
ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ম
ছানা পাঠ করার পর ইমাম অতিরিক্ত ৩টি তাকবির দেবেন। এই তিন তাকবিরের সময় ইমাম ও মুক্তাদি উভয়হাত কান পর্যন্ত উঠাবেন এবং প্রথম ও দ্বিতীয় তাকবিরে হাত কান পর্যন্ত উঠানোর পর নিচে ছেড়ে দেবেন। তৃতীয় তাকবিরের সময় কাঁধ পর্যন্ত হাত উঠিয়ে হাত ছেড়ে না দিয়ে হাত বাঁধবেন। এরপর ইমাম সূরা ফাতিহা ও কিরাআত শেষ করে যথারীতি রুকু ও সিজদা করার মাধ্যমে ১ম রাকাআত সম্পূর্ণ করে আবার দাঁড়িয়ে ২য় রাকাআতের কিরাত সম্পূর্ণ করতে হবে।

এরপর রুকুতে যাবার পূর্বে আবার অতিরিক্ত ৩ তাকবির দেবেন এভাবে যে, কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে তাকবির বলে হাত ছেড়ে দেবেন। এরপর ৪র্থ তাকবির তথা রুকুর তাকবির বলে সোজা রুকুতে চলে যাবেন। এরপর অবশিষ্ট ঈদুল আজহার ঈদের নামাজ যথারীতি আদায় করে ছালাম ফিরাবেন। এরপর ইমাম সাহেব মিম্বরে ওঠে দুটি খুৎবাহ পাঠ করবেন।


আশা করি, কুরবানী ঈদ বা ঈদুল আজহার নামাজের নিয়ত ও নিয়ম পোস্টটি পড়ে ঈদের নামাজ আদায় করার নিয়ম জানতে পেরেছেন।
Previous Post Next Post